বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

হাটে চলছে দরকষাকষি

স্বদেশ ডেস্ক:

রাজধানীর একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলীসহ অস্থায়ী হাটগুলোয় কোরবানির পশুতে ভরপুর। পশু আসা অবশ্য অব্যাহত আছে। গতকাল সকালে ক্রেতা কম থাকলেও বিকালের দিকে উপস্থিতি বাড়ে। দরকষাকষির পর বনিবনা হয়ে গেলে কিনেছেন পছন্দের পশুটি। ছুটির এ দিনে কেনাবেচাও হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আজ থেকে জমজমাট বেচাকেনা হবে।

মানিকগঞ্জের মিয়া রহমত গাবতলী হাটে ১৬টি গরু নিয়ে এসেছিলেন। এর মধ্যে ৬টি বিক্রি হয়েছে। অবশিষ্টগুলো বিক্রি হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। তার একেকটি গরু এক লাখ ২০ থেকে ২ লাখ টাকা দাম হাঁকছেন। ব্যবসায়ী বশিরউদ্দিন মাইজভান্ডারী নিয়ে এসেছেন উট। দাম হাঁকছেন সাড়ে ৮ লাখ থেকে ১২ লাখ টাকা। তবে উটের ক্রেতা তেমন দেখা যাচ্ছে না বলে তিনি জানান।

কুষ্টিয়া থেকে ১৫টি দেশি গরু এনেছেন ফরিদউদ্দিন। তিনি সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হাঁকছেন সাড়ে ৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া অন্য গরুর দাম চাচ্ছেন ৮০ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। হাট ঘুরে দেখা যায়, খাসি ১০ থেকে ৩০ হাজার, ভেড়া ১৫ থেকে ২৫ হাজার, মহিষ ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর গাবতলী হাটে গিয়ে দেখা যায়, ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর পর ট্রাক ভর্তি গরু হাটে নামছে। এ ছাড়া খোলা ভ্যানে ছাগল-ভেড়াও আসছে। ক্রেতা-বিক্রেতার জমজমাট উপস্থিতিও ছিল বেশ। মাঝারি আকারে গরুর সামনে দেখা যায় বেশ ভিড়। গাবতলী হাট ছাড়াও নগরীর কয়েকটি পশুর হাট ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহস্পতিবার দিনভর বৃষ্টির কারণে রাজধানীর হাটগুলোয় নোংরা কাদা পানির ভয়ে অনেকে বাজারে যাননি। গতকাল শুক্রবার আহাওয়া ভালো থাকায় কোরবানির হাটগুলোয় ভিড় জমান ক্রেতারা। গাবতলী হাটের ইজারাদার লুৎফর রহমানের ছেলে ও হাট পরিচালনা কমিটির সদস্য রাকিব ইমরান বলেন, হাটে গরু, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ছাড়াও উট এসেছে। এবার দেশি গরুর সংখ্যাই বেশি। আজ কেনাবেচাও বেশ ভালো।

সরেজমিন নগরীর উত্তরা, মহাখালী, মেরাদিয়া, শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনির মৈত্রী সংঘের মাঠ, গোলাপবাগ মাঠ, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠে পশুর হাটে ক্রেতার উপস্থিতি বেশ দেখা গেল। অনেককে গরু নিয়ে ফিরতে দেখা গেল।

রাজধানীর কমলাপুর পশুর হাটে সাড়ে ৩০ মণ ওজনের ষাঁড় ‘বাহাদুর’কে ঘিরে বেশ জটলা দেখা গেল। পাশাপাশি ২৭ মণ ওজনের ‘বাহুবলী’ও রয়েছে। ৩০ মণী বাহাদুরের দাম হাঁকা হচ্ছে ১৪ লাখ টাকা। সাড়ে ২৭ মণী বাহুবলী ১৩ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে মালিক জানান। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের ‘এফ অ্যান্ড এফ এগ্রো ফার্ম’ থেকে আনা হয়েছে ষাঁড় দুটি।

প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফিরোজ হাসান অনিক বলেন, শুধু কোরবানিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রায় পাঁচ বছর ধরে লালন-পালন করেছি। আমার খামারের সবচেয়ে বড় এ দুটি গরু।

বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার হরেক জাতের আর নামের গরু আমদানি হচ্ছে। অভিজাত শিংওয়ালা হরিয়ানা গরু, মিরকাদিমের সাদা গাই, দক্ষিণাঞ্চলের পালা মহিষ, মোটাতাজা সিন্ধি গরু, দেশি গরু, উট, দুম্বা, ব্লাক বেঙ্গল ছাগল, রামছাগল ইত্যাদি পশু এবার বাজারে উঠেছে। ভারত থেকে আনা গরুও রয়েছে। বাহারি শিং দেখে যে কেউ বলে দিতে পারেন এটা হরিয়ানার গরু।

ধবধবে সাদা রং দেখে চেনা যায় মিরকাদিমের গরুগুলো। মিরকাদিমের সাদা গাই কেবল পুরান ঢাকার গনি মিয়ার হাটেই (রহমতগঞ্জ খেলার মাঠে) পাওয়া যায়। উট ও দুম্বা কিনতে হলে যেতে হবে গাবতলীতে।

হাটগুলোয় জালনোট শনাক্তকরণে বসানো হয়েছে স্ক্যানিং মেশিন। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ ও র‌্যাব। রাজধানীতে এবার গাবতলী স্থায়ী পশুর হাটের পাশাপাশি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877